October 28, 2025

বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম


সংস্থা: বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম একদিনে প্রায় আড়াই শতাংশ বেড়েছে। রাশিয়ার প্রধান দুটি তেল কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় সরবরাহ–সংক্রান্ত উদ্বেগে এই বৃদ্ধি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১ দশমিক ৫৬ ডলার বা ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেড়ে ৬৪ দশমিক ১৫ ডলারে পৌঁছায়। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেল ১ দশমিক ৫৩ ডলার বা ২ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে ৬০ দশমিক শূন্য ৩ ডলারে দাঁড়ায়। খবর রয়টার্সের।

এর আগে বুধবার যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে রাশিয়ার গড়িমসির অভিযোগ তুলে রোসনেফট ও লুকঅয়েল নামের দুটি প্রধান তেল কোম্পানির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে বিশ্ববাজারে সরবরাহ সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে, যার মধ্যে রাশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মস্কোকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর আইনপ্রণেতাদের চাপ সত্ত্বেও এতদিন রাশিয়ার ওপর জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ থেকে বিরত ছিলেন। তিনি আশা করেছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া যুদ্ধ থামাবে। তবে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় অবশেষে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তিনি।

গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যও একইভাবে রোসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়া উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফিলিপ নোভার জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সাচদেবা বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থায়ন কমাতে লক্ষ্য করছে। এতে রাশিয়ার তেল সরবরাহ সংকুচিত হবে এবং ক্রেতারা বিকল্প উৎসে ঝুঁকবে।

তিনি আরো বলেন, যদি ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমায়, তবে এশিয়ার দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের দিকে ঝুঁকবে, যা আটলান্টিক অঞ্চলে দাম বাড়াবে।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত শোধনাগারগুলো জানিয়েছে, তারা রাশিয়া থেকে তেল কেনা পুনর্বিবেচনা করছে, যাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা কোনো কোম্পানি থেকে সরাসরি সরবরাহ না আসে।

তবে বাজারে কাঠামোগত পরিবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। জ্বালানি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিস্টাড এনার্জির গ্লোবাল মার্কেট বিশ্লেষক ক্লদিও গালিমবারতি বলেন, এই দামবৃদ্ধি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া; দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব সীমিত হতে পারে। গত কয়েক বছরের নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার উৎপাদন বা আয় কমাতে তেমন সফল হয়নি।

তিনি আরো বলেন, ওপেকপ্লাস দেশগুলোর উৎপাদন শিথিলকরণ, চীনের তেল মজুত বৃদ্ধি এবং ইউক্রেন–মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি আগামী মাসে বাজার নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *