সংসার চালাতে চপ বিক্রি করেন দম্পতি, এখন খুশি

চপ বললে আলুর চপের ছবিটাই চোখে ভাসে। তবে এই ধারণা বদলে দিয়েছেন যশোরের কেশবপুরের এক দম্পতি। অভাবের সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে তাঁরা যখন গ্রামের বাজারে চপের দোকান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন ভিন্ন কিছু করার ভাবনা তাঁদের মাথায় আসে। সেই ভাবনা থেকেই তাঁরা লাউ, টমেটো, শাক, শিম, কাঁচা মরিচ, মোচা ও রসুনের মতো উপকরণ দিয়ে চপ বানাতে শুরু করেন। স্বভাবতই এই চপ ভালো সাড়া ফেলেছে। মো. আলাউদ্দিন ও জোহরা বেগম দম্পতির দোকানটিতে গিয়ে দেখা যায়, নানা পদ তৈরিতে ব্যস্ত এই দম্পতি। তাঁদের কথা বলার ফুরসত নেই। কারণ, ইফতারের জন্য তাঁদের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। প্রতিদিন তাঁরা যত সবজি চপ তৈরি করেন, তার সব বিক্রি হয়ে যায়।
অনেকে না পেয়ে ফিরে যান। আলুর মতো অন্যান্য উপকরণের চপ বানানোর চিন্তা মাথায় এল কীভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইফতারে সবাই ভাজা খেতে পছন্দ করেন। সেই ভাজা যদি শাক আর সবজির হয়, তাহলে মানুষ পছন্দ করবে, এমন একটা ধারণা তাঁর মনে ছিল। লুৎফর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘ইফতারের সময় চপ আমরা সচরাচর খেয়ে থাকি। তবে সবজির চপ খুবই ভালো লাগে। এ জন্য প্রায় প্রতিদিনই বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যাই। স্বাদও যেমন, তেমনি পুষ্টিকরও।’ চপ বিক্রেতা আলাউদ্দিন দুবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ। ভিটেবাড়ি ছাড়া অন্য কোনো জমি নেই। তিনি এর আগে খেতখামারে কাজ করে সংসার চালাতেন। অসুস্থ হয়ে পড়ার পর আর কোনো কাজ করতে পারেন না। পাঁচজনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। এরপর স্বামী–স্ত্রী মিলে দোকানটি দিয়েছেন। জানালেন, বাকিতে তেল, বেসনসহ সব পণ্য কেনেন। বিক্রির টাকা পেয়ে শোধ করে আবার নিয়ে আসেন। এভাবেই চলছে তাঁদের।