সংস্থা: বাস-রুট ফ্র্যাঞ্চাইজিং প্রকল্প সফল করতে চায় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। ঢাকায় গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রায় ৬ বছর আগে শুরু হয়েছিল বাস রুট রেশনালাইজেশনের কার্যক্রম। কিন্তু বাস মালিকদের অসহযোগিতা ও বারবার কমিটি পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব স্বীকৃত এই পদ্ধতি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অনেকটাই ব্যর্থ হয়ে যায়।
২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক রুট ভিত্তিক কোম্পানির অধীনে বাস চালানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর তিনি মারা গেলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির দায়িত্ব পান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি ১১টি সভা করেছেন। এরপর সংস্থাটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস কমিটির দায়িত্ব পান। তার তত্ত্বাবধানে ২৭তম সভা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালে চালু হয় ‘ঢাকা নগর পরিবহন’। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশপনের প্রশাসক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ কমিটির সবশেষ ২৯তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি মোট দুটি সভা করেছেন।
এবার এই কমিটি নতুন করে বাস রুট রেশনালাইজেশন নতুন পরিকল্পনা, কার্যক্রম, ঢেলে সাজাতে কাজ শুরু করেছে।
সবগুলো বাস কোম্পানিকে কয়েকটির মাধ্যমে পরিচালনা করার উদ্যোগের নামই বাস রুট রেশনালাইজেশন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে চেষ্টা ছিল ধীরে ধীরে পুরো রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থা একটি কোম্পানির আওতায় আনা। এছাড়া ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় বাস সড়ক থেকে তুলে নিয়ে আধুনিক মানের বাস নামানো, শহরের বাইরের চারিদিকে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল, ডিপো নির্মাণ করা।
আরো পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস সংরক্ষণে ভিডিও-ছবি ও তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি
ঢাকার জন্য কোম্পানিভিত্তিক বাস সেবা প্রবর্তনের রূপরেখা তৈরি করে ডিটিসিএ। বাসগুলো পরিচালনার দায়িত্বে থাকার কথা ছিল নির্দিষ্ট কোম্পানির। সেই কোম্পানিগুলো গঠন করা হয় জয়েন্ট ভেঞ্চার পদ্ধতিতে।
বিআরটিএর হিসেবে বর্তমানে রাজধানীর ২৯১টি রুটে চলাচল করা বাসের সংখ্যা নয় হাজার ২৭টি। ঢাকার জন্য কোম্পানিভিত্তিক বাস সেবা প্রবর্তনের যে রূপরেখা তৈরি করা হয়েছিল তাতে বাসের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছিল সাত হাজার ৩৩৫টি।
কোম্পানি ভিত্তিক বাসসেবা প্রবর্তনের যে রূপরেখা তৈরি করা হয়েছিল সেখানে বলা হয়, মেরুন ১, ২ নামে দুটি কোম্পানি গঠন করা হবে। ওই দুই কোম্পানির বাসগুলো হেমায়েতপুর, সদরঘাটের কয়েকটি রুটে চলাচল করবে। অরেঞ্জ ১, ২, ৩ নামের তিনটি কোম্পানির বাস চলবে মিরপুর, নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি রুটে। ব্লু ১, ২ নামে দুটি কোম্পানির বাস আব্দুল্লাহপুর, আজিমপুর, হেমায়েতপুরের কয়েকটি রুটে চলাচল করবে। একইভাবে পিংক ১, ২, ৩ নামে গঠন করা হবে তিনটি কোম্পানি। যেগুলোর বাস আব্দুল্লাহপুর, ঝিলমিলের কয়েকটি রুটে চলাচল করবে। গ্রিন ১, ২, ৩ ও ৪ নামের চারটি কোম্পানির বাস চলবে ঘাটারচর, আব্দুল্লাহপুরের কয়েকটি রুটে। নর্থ ১, ২ নামে গঠন করা দুটি কোম্পানির বাস চলবে কালিয়াকৈর, আব্দুল্লাহপুরের কয়েকটি রুটে। নর্থওয়েস্ট ১, ২ নামের দুটি কোম্পানির বাস চলবে চন্দ্রা, হেমায়েতপুরের কয়েকটি রুটে। ভায়োলেট ১, ২ ও ৩ নামে কোম্পানির মাধ্যমে বাস চলবে কাঁচপুর, আব্দুল্লাহপুরের কয়েকটি রুটে।
এছাড়া সাউথ ১ নামে অন্য এক কোম্পানির বাস মুন্সিগঞ্জ, ঝিলমিলের কয়েকটি রুটে চলাচল করবে। কিন্তু এসব উদ্যোগ পুরোপুরি চালু করতে পারেনি না বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি। ৩ রুট চালু হলেও তা ৫ আগস্টের পর বন্ধ হয়ে যায়।