গাজীপুরে সোনার দোকান লুট, সব হারিয়ে এখন পথে ব্যবসায়ী

ঢাকা: গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসা স্বর্ণ ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ দাস এখন সম্পূর্ণভাবে পথে বসেছেন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি হামলা, লুটপাট ও দখলচেষ্টার ঘটনায় তার স্বর্ণালঙ্কারের দোকান জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবে পরিচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুব্রত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে সংঘটিত এই হামলার পেছনে ভূমিকা রয়েছে ও অভিযোগ দিয়েও মেলেনি কার্যকর কোনো সহায়তা এমনটাই অভিযোগ গৌরাঙ্গ দাসের।
গৌরাঙ্গ দাসের অভিযোগ অনুযায়ী, গত ১৭ জুন দুপুর দেড়টার দিকে সুব্রত চন্দ্র দাস, কবির হোসেন, টিপু মিয়াসহ প্রায় ৩০–৩৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশী অস্ত্র নিয়ে তার দোকানে হামলা চালায়। তাকে ও তার ভাই চন্দন ও বাবুল দাস এবং দোকানের ম্যানেজার জয় সাহাকে মারধর করে দোকান থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর দোকানের ৩৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা, যার বাজারমূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
হামলার সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে, সুব্রত দাস শ্রীপুর থানার এস আই মনোয়ার হোসেন এর সহযোগিতায় দোকানের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। পরবর্তীতে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সুব্রতের সহযোগী পায়েল সরকার আরও ৫-৬ জনকে সঙ্গে নিয়ে দোকানের সাইনবোর্ড খুলে ফেলে, এবং তার পরিবর্তে নতুন নামের ব্যানার লাগিয়ে দেয়।
গৌরাঙ্গ দাস শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও, পুলিশ এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কুদ্দুছ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও, অভিযোগকারীকে কিছু না জানিয়ে চলে যান বলে জানান গৌরাঙ্গ। এই পরিস্থিতিতে নিজের দোকানে যাওয়া তো দূরের কথা, নিজের বাড়িতেও ফিরতে পারছেন না গৌরাঙ্গ, কারণ প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পরতে হচ্ছে তার পরিবারকে।
স্থানীয়রা বলেন, গৌরাঙ্গ একজন সৎ ব্যবসায়ী। তার ব্যবসায়িক সাফল্য কিছু প্রতিদ্বন্দ্বীর চোখে ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মূল দোকানমালিক হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে সুব্রত চন্দ্র দাসের দোকান মালিকানা নিয়ে মামলা চলমান থাকলেও, সেটির নিষ্পত্তির আগেই সুব্রত চন্দ্র দাস জোরপূর্বক এই হামলা এবং দখলের চেষ্টা করেন।
এই ঘটনার পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সুব্রত চন্দ্র দাসসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল।