দেশে শুরু হয়েছে সুতো তৈরির নতুন পন্থা

এককালে ঢাকাই মসলিনের নামডাক ছিল বিশ্বজুড়ে। ফুটি কার্পাস তুলা থেকে সুতা বানিয়ে বয়ন করা হতো অতিসূক্ষ্ম কাপড় মসলিন। একসময় মসলিনের বুনন বিলুপ্ত হয়ে যায়। পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় ঐতিহ্যবাহী সেই কাপড় বোনার অনন্য শিল্পকর্ম। বছর কয়েক আগে ঢাকাই সেই মসলিনের পুনর্জন্ম হয়েছে। কারিগরি দক্ষতা কাজে লাগিয়ে এবার পদ্মফুলের ডাঁটা থেকে তৈরি সুতায় বানানো হয়েছে বিশেষ একটি স্কার্ফ, যা পদ্মরেশম বা লোটাস সিল্ক নামে পরিচিত। পদ্মরেশম সুতার রং হালকা দুধে–হলুদ। পদ্মফুলের ডাঁটায় থাকা একধরনের আঠা থেকে তৈরি হয় এই সুতা। সেই সুতায় তৈরি সিল্ককে বলে লোটাস সিল্ক। সারা বিশ্বে এই লোটাস সিল্ক অনেক দামি কাপড়। এক কেজি পদ্মরেশম সুতার দাম ২ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ ডলার।
গর্ততাঁতে জামদানি বয়নকৌশল অবলম্বনে সম্প্রতি ছয় গজ দীর্ঘ স্কার্ফটি বোনা হয়। পরে এটি ইউনেসকোকে দেওয়া হয়েছে। স্কার্ফটি রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের কার্যালয়ে রাখা আছে। পদ্মের ডাঁটায় থাকে অসংখ্য ছোট ছোট কূপ বা পোর। সেখানে জমে থাকে আঠাসদৃশ পদার্থ। এই আঠা বাতাসের সংস্পর্শে এসে জমাট বেঁধে যায়। সেটি নৈপুণ্যের সঙ্গে পাকিয়ে সুতা তৈরি করা হয়। এই সুতা বাতাসে দ্রুতই শুকিয়ে যায়। রোদে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এই সুতা থেকেই কাপড় তৈরি হয়। বিশ্লেষক ও গবেষকেরা বলছেন, নতুন সম্ভাবনার পদ্মরেশম বাংলাদেশের জন্য হতে পারে ‘তুরুপের তাস’। যথাযথ পরিকল্পনা ও সঠিক বাস্তবায়ন বিশ্বের বিলাসী পোশাকের বাজারে পদ্মরেশম দিয়ে বাংলাদেশ ভিন্ন জায়গা করে নিতে সক্ষম হবে।